
দশমিনা (পটুয়াখালী)প্রতিনিধি।
পটুয়াখালী দশমিনা উপজেলায় জেলেদের চাল পেতে হলে ইউপি চেয়ারম্যানকে প্রতি নামে পাচঁ কেজি করে খরচের ভাগ দিতে হবে বলে মাইকে ঘোষনা করেন চেয়ারম্যান নিজেই। ঘটনাটি দশমিনা উপজেলার রণগোপালদী ইউনিয়নে গতকাল মঙ্গলবার দুপুঁর দেঁড়টার দিকে জেলেদের মাঝে চাল বিতরনের সময় ইউনিয়ন পরিষদের নিচে কথাগুলো চেয়ারম্যান নিজেই মাইকে ঘোষনা দেন। অথচ চেয়ারম্যানের সামনেই প্রতি নামে দুই মাসে দিচ্ছে ৫০ কেজি, ৩০ কেজি ও ২৫ কেজি করে চাল। চাল কম পেয়েও প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছেনা কেউ। যদি সামনের মাসে তার নাম বাদ পরে যায়?
জানা যায়, দশমিনা উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে মোট ৬৯৯৬ জন জেলে পরিবার রয়েছে। তার মধ্যে রণগোপালদী ইউনিয়নে রয়েছে ২২৭৫ টি পরিবার। রণগোপালদী খাদ্যগুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মং থামেন এর সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলেদের তিন মাসের মোট ৯১ মেট্রিকটন করে ২৭৩ মেট্রিকটন চালের ডিউ আমাদের কাছে আসছে। তবে সেখান থেকে রণগোপালদী চেয়ারম্যান গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলেদের দুই মাসের জন্য মোট ১৮২ মেট্রিকটন চাল নিয়েছেন এবং ছাড় করা হয়েছে। মৎস্য অফিস সূত্রে জনা যায়, রণগোপালদী ইউনিয়নে ২২৭৫ নামে তিন মাসে মোট ২৭৩ মেট্রিকটন চাল বরাদ্ধ পাওয়ার কথা। তাতে প্রতি জেলে তিন মাসে ৪০ কেজি করে ১২০ কেজি চাল পাবে। কিন্তু এখানে বাস্তবে হয়েছে তার উল্টো। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রকৃত জেলেদের বিস্তার অভিযোগ, তাদের তিন মাসের চাল দেয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে চাল দিচ্ছে দুই মাসের। এছাড়াও ৪০ কেজি করে ৮০ কেজির স্থলে ৬০ কেজি, কাউকে দিচ্ছে ৩০ কেজি আবার কাউকে দিচ্ছে ৫০ কেজি। অন্যদিকে, ইউপি নির্বাচন কালীন সময় চেয়ারম্যন ও মেম্বার বিরোধি জেলেদের খাতায় নাম থাকলেও নাম নেই বলে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। আওলিয়াপুর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের খলিল রাঢ়ী ও মো. হাফেজ গাজী, বলেন, আমরাসহ অনেক প্রকৃত জেলে আছে আমাদেরকে চাল দেয় ২৫ কেজি। অথচ জেলে নয় এমন লোক মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের অনুসারী পছন্দের লোকদের চাল দিচ্ছে ৭৫ কেজি। যে প্রকৃত অনেক জেলে চাল রেখে বাড়ি চলে গেছে। ৭ নং ওয়ার্ডের খলিল হাওলাদার বলেন, তিনি ৩০ কেজি চাল পেয়েছেন এবং মাহাবুল বলেন, আমার ভাই আউয়াল ও ভাতিজা জাহাঙ্গীর সহ তিন জনে দুই মাসে ৯০ কেজি চাল পেয়েছি। এরই মধ্যে মাহাবুলের ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার অসিম সমাদ্দার চলে আসলে লোকটি এলোমেলো হয়ে পরে। পরে মেম্বার অসিম সমাদ্দারের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার চাল আরেকজনে মাথায় করে নিয়ে গেলে আমরা কি করমু। আমরা ৮০ কেজি করে চাল দেই। রণগোপাদী বাজারের আবুল হাওলাদার একটি গারিতে যাওয়ার সময় জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি ৩০ কেজি চাল পেয়েছি। জাফর রাঢ়ী বলেন, আমি ৪০ বছর পর্যন্ত জাল বাই সবাই আমারে চেনে। প্রতি বছর চাউল পাইলেও এবছর চেয়ারম্যানে কয় আমার নাকি নাম নাই। কিন্তু আমি জানি মুল তালিকায় আমার নাম আছে। আমার নামের ওই চাল কারে দেবে তা আমি জানিনা। এবিষয়ে জেলেদের তালিকায় নাম রয়েছে কবির হাওলাদার বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে জেলেদের চাল পাই। কিন্তু এখনো তালিকায় নাম থাকা সত্বেও চাল পাচ্ছি না। এরকম অনেকেই আছে চাল পায় না আমরা সবাই মিলে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করমু কেনো চাল পামুনা। এ বিষয় রণগোপালদী ইউপি চেয়ারম্যান মো.আজিজ মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি নয়টি ওয়ার্ড ভাগ করে তিনটি ভেনুতে সুন্দর ও সুষ্ঠভাবে ৮০ কেজি করে চাল বিতরন করেছি। জারা বলে ৩০ কেজি তারা আমাকে ফাসানোর জন্য মিথ্যা ও বানোয়াট কথাবার্তা বলেন। উপজেলা মৎস্য দপ্তরের মেরিন ফিসারিস্ট কর্মকর্তা মো. নাজমুল হাসান বলেন, আমি যতক্ষন সময় ছিলাম ততক্ষন কোন অনিয়ম হয়নি। পরে কি হয়েছে তা আমি জানিনা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসা. নাফিসা নাজ নীরা বলেন, চালে কম দেয়ার কোন সুযোগ নেই। এরকম অনিয়ম হলে আমি তদন্ত করে দেখব সত্যতা পেলে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় আমি লিখে দেব।